মোহনবাগান-৫ (সনি, জেজে-২, গ্লেন-২)
মাজিয়া-২ (ইমাজ, রাজু-আত্মঘাতী)
দেশে তো বটেই, বহু দিন পর আন্তর্জাতিক ম্যাচেও পালতোলা নৌকা দৌড়চ্ছে!
বিদেশি দলকে শেষ কবে মোহনবাগান এ ভাবে বিপর্যস্ত করেছে মনে করতে পারছেন না অনেকে। গুয়াহাটিতে বুধবার সঞ্জয় সেনের দল এএফসি কাপের ম্যাচে উড়িয়েই দিল মলদ্বীপের মাজিয়াকে। প্রথমার্ধেই ত্রিশ গজ দূর থেকে সনি নর্ডির দুর্দান্ত বাঁকানো শটে গোলের শুরু। তার পর শুধুই সবুজ-মেরুন ঝড়। অনায়াসে জোড়া গোল করলেন জেজে। গত পাঁচ ম্যাচে গোল নেই যাঁর, সেই কর্নেল গ্লেনও জোড়া গোলের মালিক এ দিন। কিন্তু এই চমকপ্রদ আন্তর্জাতিক ম্যাচ জয়ের মধ্যেও কাঁটা হয়ে থেকে গেল বাগান রক্ষণ। ৩-০ এগিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও দু’গোল হজম করে। তার মধ্যে আবার একটা গোল ডিফেন্ডার রাজু গায়কোয়াড়ের আত্মঘাতী।
দলের এই দুর্ধর্ষ পারফরম্যান্সের পর বাগান কোচ সঞ্জয় অবশ্য অন্য কারণে অভিমানী। ম্যাচের পর গুয়াহাটি থেকে ফোনে বললেন, ‘‘হয়তো আমাদের সমালোচকরা বলবেন, মাজিয়া টিমটা দুর্বল। কিন্তু চিনের শেনডং টিমের চেয়েও আমরা কিন্তু অনেক দুর্বল ছিলাম। সেখানে ছয় গোলে হারায় অনেকেই অনেক কথা বলেছিলেন। আজ তাঁরা কী বলবেন?’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘ড্রেসিংরুমে আজ সবাইকে বলেছিলাম শেষ বিদেশি ক্লাবের বিরুদ্ধে ছয় গোল খেয়েছিলে, এ বার সেটার জবাব দাও। তা সত্ত্বেও বাড়তি আত্মবিশ্বাসের জন্য ছেলেরা দু’গোল খেয়ে গেল। এটা আমাদের ফিরতি অ্যাওয়ে ম্যাচে সমস্যায় ফেলবে। মাজিয়া টিমটা যথেষ্ট ভাল। আমরা শুরুতেই তিন গোল চাপিয়ে দিয়েছিলাম বলে ওরা আর উঠে দাঁড়াতে পারেনি।’’
খেলার শেষে সতীর্থের আলিঙ্গন।
তিন দিন বাদেই আবার ফিরতে হবে আই লিগে। শনিবারই গোয়ায় ম্যাচ। টিম যাতে ক্লান্ত না হয়ে পড়ে সে জন্য এ দিনের ম্যাচে কিছু পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বাগান কোচ। তবে প্রথম দলে রেখেছিলেন চার বিদেশিই। যদিও হাফটাইমের কিছু পরেই সনিকে তুলে নেন। সবুজ-মেরুনের বেঞ্চও যে শক্তিশালী সেটা কিন্তু এ দিন প্রমাণিত। মলদ্বীপের টিমে জাতীয় দলের বেশ কিছু ফুটবলার ছিলেন। বাগান সে সব তোয়াক্কা না করে সনির নেতৃত্বে শুরু থেকেই ঝড় তোলে। সঞ্জয়ের আক্রমণ ভাগকে দেশের সেরা বলছেন অনেক কোচই। কিন্তু তাতে সামান্য মরচে পড়েছিল গ্লেন অফ ফর্মে থাকায়। টাম্পাইন্স রোভার্স ম্যাচের পর এই প্রথম আবার স্বমহিমায় প্রাক্তন ত্রিনিদাদ ও টোবাগো বিশ্বকাপার। আই লিগে সালগাওকর ম্যাচের আগে এই বড় জয় দলে আত্মবিশ্বাস ফেরাবে মানছেন বাগান কোচ। ‘‘যারাই আমাদের বিরুদ্ধে নামবে, ভাববে এরা একটি বিদেশি টিমকে পাঁচ গোল দিয়ে এসেছে।’’ এ দিন এএফসি কাপের অন্য ম্যাচে লাও টয়োটা এফসির কাছে ১-২ হারল বেঙ্গালুরু এফসি।
মোহনবাগান: শিল্টন, প্রবীর, লুসিয়ানো, রাজু (সঞ্জয়), ধনচন্দ্র, কাতসুমি, প্রণয়, লেনি (বলবন্ত), সনি (কেন লুইস), জেজে, গ্লেন।
সৌজন্যে: আনন্দবাজার পত্রিকা